টবে কদবেল চাষ পদ্ধতি
খুব স্বাদের একটা ফল। নাম তার কদবেল। ফলটা দেখতে অনেকটা টেনিস বলের মত। বর্ষার শেষে যখন অন্য কোন ফল বাজারে পাওয়া যায় না তখন এই ফল দেখা যায় । মুখরোচক অম্ল-মধুর স্বাদের জন্য পাকা কদবেলের কদর এ দেশে সব বয়সের মানুষের রয়েছে। পাকা কদবেলের খুব সুন্দর ঘ্রান বিদ্যমান। পাকা ফল ফাটিয়ে অথবা ছিদ্র করে কাঠি দিয়ে এ ফলের শাঁস কেতে হয় । কাঁচা শাঁসের রঙ হালকা বাদামি-ঘিয়ে, কইষটা, মিষ্টি-টক। কিন্তু পাকলে গাঢ় চকোলেট বা পীতাভ বাদামি হয়ে যায়, কালচে বাদামিও হয়। পাকলে শাঁস নরম হয়, চটকালে মাখনের মতো হয়ে যায়। শাঁসের ভেতর থাকে ছোট ছোট অনেক হালকা বাদামি রঙের বীজ। বীজ থেকে সহজে চারা হয়। তবে টবে রোপনের জন্য কলমের চারা উপযোগি। কলমের চারা থেকে দুই তিন বছরের মধ্যে ফুল-ফল ধরে। ছাদে টবে এ গাছের চাষাবাদ করা যায়।
টবে কদবেল চাষ পদ্ধতিঃ
টবে কদবেলের চারা রোপনের জন্য কমপক্ষে ২০ ইঞ্চি সাইজের ড্রাম বা টব সংগ্রহ করতে হবে । ড্রামের তলায় ৩-৫ টি ছিদ্র করে নিতে হবে । যাতে গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে । টব বা ড্রামের তলার ছিদ্রগুলো ইটের ছোট ছোট টুকরা দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে । টব বা ড্রামের গাছটিকে ছাদের এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে সবসময় রোদ থাকে । এবার ২ ভাগ বেলে দোআঁশ মাটি, ১ ভাগ গোবর, ১০০ গ্রাম টি,এস,পি সার, ৮০ গ্রাম পটাশ সার, ১০০ গ্রাম সরিষার খৈল এবং ৪০০ গ্রাম হাড়ের গুড়া একত্রে মিশিয়ে ড্রাম বা টবে পানি দিয়ে রেখে দিতে হবে ১০-১২ দিন । অতঃপর মাটি কিছুটা খুচিয়ে দিয়ে আবার ৮-১০ দিন একইভাবে রেখে দিতে হবে । মাটি যখন ঝুরঝুরে হবে তখন একটি সবল সুস্থ কলমের চারা উক্ত টবে রোপন করতে হবে । চারা রোপনের সময় খেয়াল রাখতে হবে গাছের গোড়া যেন মাটি থেকে আলাদা না হয়ে যায় । চারা গাছটিকে সোজা করে লাগাতে হবে । সেই সাথে গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উচু করে দিতে হবে এবং মাটি হাত দিয়ে চেপে চেপে দিতে হবে । যাতে গাছের গোড়া দিয়ে বেশী পানি না ঢুকতে পারে । একটি সোজা কাঠি দিয়ে গাছটিকে বেধে দিতে হবে । চারা লাগানোর পর প্রথমদিকে পানি কম দিতে হবে । আস্তে আস্তে পানি বাড়াতে হবে।
অন্যান্য পরিচর্যাঃ
টবে কদবেলের চারা লাগানোর ৬-৭ মাস পর থেকে নিয়মিত ২৫-৩০ দিন অন্তর অন্তর সরিষার খৈল পচা পানি প্রয়োগ করতে হবে । সরিষার খৈল কমপক্ষে ৭ দিন পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে । তারপর সেই পচা খৈলের পানি পাতলা করে গাছের গোড়ায় দিতে হবে । ১ বছর পর টবের আংশিক মাটি পরিবর্তন করে দিতে হবে । ২ ইঞ্চি প্রস্থে এবং ৬ ইঞ্চি গভীরে শিকরসহ মাটি ফেলে দিয়ে নতুন সার মিশ্রিত মাটি দিয়ে তা ভরে দিতে হবে । মাটি পরিবর্তনের এই কাজটি সাধারণতঃ বর্ষার শেষ এবং শীতের আগে করলেই ভাল হয়।
ছাদ বাগানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সঠিকভাবে মাটি প্রস্তুত করা।মাটি প্রস্ততের নিয়ম জানুন এখান থেকে(ছাদ বাগানের মাটি তৈরী করা)।আর ভাল ফলন পেতে হলে প্রতি বছর টবের মাটি আংশিক পরিবর্তন করতে হয়। টবের মাটি পরিবর্তন কিভাবে করবেন জেনে নিন এখান থেকে(টবের মাটি কিভাবে পরিবর্তন করবেন)।